মহামারীর কারণে বেড়েছে কফিনের বিক্রি, ঝুঁকি নিয়েই ওভারটাইম ফ্রান্সে

করোনা ভাইরাসের আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গেই ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি। লকডাউনের জেরে অধিকাংশ ব্যবসাই প্রায় বন্ধ। লাভের মুখ দেখছেন না প্রায় কোনো ব্যবসায়ী। এর মধ্যেই কিছু কারখানার চেহারা যেন অন্যরকম। সেখানে অন্যদিনের থেকে বেশি সময় ধরে চলছে কাজ। এমনকি শনি ও রবি দুদিনের পরিবর্তে কর্মচারীদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে একদিন। সারাদিন চলছে কাঠ কাটা, বার্নিশ করা। হ্যাঁ, এইসব কারখানায় কফিন তৈরি হয়।

সারা পৃথিবী জুড়ে মহামারীর চেহারা নিয়েছে কোভিড-১৯। মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। এমন পরিস্থিতিতে কফিনের চাহিদাও বেড়েছে প্রচুর। বিশেষ করে ফ্রান্সের ছবিটা বেশ আতঙ্কের উদ্রেক করে। ভাইরাসের সংক্রমণে বিধ্বস্ত দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতেই আছে ফ্রান্স। সেখানে ইতিমধ্যে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন ভাইরাসের আক্রমণে।

ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় কফিন নির্মাতা ফ্যাক্টরিটি হল, ওজিএফ ফ্যাক্টরি। সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকেই কফিন তৈরি করে আসছেন তাঁরা। কিন্তু এত বেশি চাহিদা আগে কখনো দেখেননি বলেই জানাচ্ছেন কারখানার ডিরেক্টর ইমানুয়েল গ্যারে। মাঝে মাঝে কয়েকদিনের জন্য চাহিদা বাড়লেও, একটানা এতদিন ধরে সেই বাজার থাকেনি। ফলে কারখানার কাঁচামালের জোগনেও টান পড়ছে। ওজিএফ কোম্পানি অবশ্য আগে থেকেই কাঠ, আঠা, বার্নিশ মজুত করে রেখেছে। কিন্তু কাঁচামালের সংকটে পড়তে হচ্ছে অনেক ছোট কারখানাকেই।

কথায় বলে, সমস্ত খারাপ সময় আসলে কফিন নির্মাতার সুসময়। এক্ষেত্রেও যেন সেরকম ছবিই দেখা যাচ্ছে। তবে ব্যবসা বাড়লেও আতঙ্কের মধ্যে আছেন তাঁরাও। ইতিমধ্যে এই কারখানার তিনজন শ্রমিক ভাইরাসের আক্রমণে মারা গিয়েছেন। আইসোলেশনে আছেন ১৫ জন। চাহিদা মেটাতে রাতদিন কাজ করে যেতে হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু সংক্রমণের ভয়ও তো পিছু ছাড়ে না। তাছাড়া একটা কারখানার মধ্যে স্যোসাল ডিস্টেন্সিং বা অন্যান্য সুরক্ষার ব্যবস্থাও তো খুব একটা সহজে করা যায় না। পৃথিবী থেকে এই মহামারী বিদায় নিতে আর কতদিন লাগবে? দিন গুনছেন প্রত্যেকেই।