৯ মিনিটের অন্ধকার আনতে পারে দীর্ঘ ব্ল্যাকআউট, চ্যালেঞ্জের মুখে বিদ্যুৎ বিভাগ

গত ৩রা এপ্রিল সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীর কাছে বক্তব্য রাখেন। আজ, ৫ই এপ্রিল, রাত ৯টায় প্রত্যেককে বাড়ির ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে অনুপ্রেরণা জোগাতে অনুরোধ করেন তিনি। ৯ মিনিট যেন বন্ধ থাকে বাড়ির আলো। বদলে জ্বলে উঠুক প্রদীপ, মোমবাতি, টর্চ কিংবা ফোনের আলো।

কিন্তু এই ঘোষণার জন্য কালঘাম ছুটছে বিদ্যুৎমন্ত্রক এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক সংস্থার। বিদ্যুৎমন্ত্রক থেকে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর উল্লিখিত ৯ মিনিট নামিয়ে আনতে পারে দীর্ঘক্ষণের অন্ধকার। কারণ, ওই ৯ মিনিটে হঠাৎ করেই কমে যাবে বিদ্যুতের চাহিদা। তারপরেই আবার বাড়বে এক ধাক্কায়! ফলে ভাঙতে পারে সরবরাহের গ্রিড। ডেকে আনতে পারে ব্ল্যাক আউট।

দেশের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা অনেকগুলি গ্রিডের সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাহারে তৈরি। যেগুলি ৫০ হার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতেই কাজ করে। নেশনাল এবং রিজিওয়ান লোড ডিস্প্যাচ সেন্টার নিয়ন্ত্রণ করে এই ফ্রিকোয়েন্সি। এই ফ্রিকোয়েন্সির অকস্মাৎ পরিবর্তন করতে হবে ওই ৯ মিনিটের সর্বনিম্ন চাহিদার জন্য। তারপর বাড়াতে হবে আবার! ফলে চাপ বাড়তে পারে লাইনে। দেখা দিতে পারে যান্ত্রিক ত্রুটি। ভেঙে যেতে পারে গ্রিডগুলি।

মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, লকডাউনের জন্য এখন কলকারখানা ও নানান অফিস বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেক কম। ২রা এপ্রিল এই চাহিদা ছিল সবথেকে কম। গড় দৈনিক চাহিদার থেকে প্রায় ২০ শতাংশ কম।

বিদ্যুৎমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, পুরো বিষয়টিই অত্যন্ত সতর্কভাবে করতে হবে। এর পিছনে দরকার সারা দেশের সমস্ত বিদ্যুৎ উৎপাদকদের গোষ্ঠী বদ্ধ প্রয়াস। সামান্য অঙ্কের ভুল ডেকে আনতে পারে বিপদ। কারণ এর আগে গ্রিড ভেঙে যাওয়ার ভয়ঙ্কর সাক্ষী রয়েছে উত্তর এবং পূর্ব ভারত। ২০১২-র ৩০ জুলাই এবং ২০১৬-র ৩১ জুলাই। দুটি ব্ল্যাকআউটেই ক্ষতি হয়েছিল প্রবল। উৎপাদিত শক্তির ২৭ শতাংশই নষ্ট হয়েছিল।

প্রাথমিক ধাপগুলির জন্য কেন্দ্র তৈরি করেছে একটা খসড়া। চূড়ান্ত পদক্ষেপের সম্পূর্ণ খসড়া পাঠানো হবে রাজ্যগুলিকে। পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎকর্তারা এমনটাই জানান। এক সঙ্গে দেশের সমস্ত উৎপাদকদের কাজ করতে হবে একই ছন্দে। নিতে হবে আগাম সতর্কতা।

কিন্তু যেকোনো রকমের আসতর্কতায় বড় বিপদ হতে পারে। অসুবিধায় পড়তে পারে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। হসপিটাল, থানা এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবাগুলির বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হলে তা সমস্যাজনক হয়ে দাঁড়াবে। সেই অন্ধকার কতটা কাটাতে পারবে মোমবাতি বা প্রদীপের আলো? এই নতুন চিন্তাতেই ঘুম ছুটছে বিদ্যুৎকর্তাদের।

More From Author See More