জনসমক্ষে হাত বেঁধে অত্যাচার চিকিৎসককে, অন্ধ্র পুলিশের আচরণে স্তম্ভিত গোটা দেশ

সামনের সারির যোদ্ধা হয়ে করোনার যুদ্ধ লড়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। দেশের নানান প্রান্তেই তাঁদেরকে সম্মান জানাতে উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে প্রশাসনকে। কিন্তু এরই মধ্যে বিশাখাপত্তনমের একটি পাশবিক ঘটনা নজর কাড়ল সকলের। এক চিকিৎসককেই হাত পিছমোড়া করে বেঁধে জনসমক্ষে অপদস্ত করল বিশাখাপত্তনম পুলিশ।

ডঃ কে. সুধাকর নামের ওই ব্যক্তি নরিসপত্তনম হাসপাতালের চিকিৎসক। পেশায় অ্যানেস্থিসিওলজিস্ট। তবে মাসখানেক আগে তাঁকে হাসপাতাল থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অভিযোগ ছিল তিনি গুজব ছড়াচ্ছেন। তবে তাঁর দাবি ছিল, সরকার থেকে পর্যাপ্ত পিপিই কিট এবং এন-৯৫ মাস সরবরাহ করা হচ্ছে না চিকিৎসকদের। বরং সেই মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে রাজনৈতিক নেতা এবং পুলিশদের। একই মাস্ক পরে ঝুঁকি নিয়ে দু’সপ্তাহ কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের, এমনটা দাবি করেই সরব হয়েছিলেন তিনি।

শনিবার ঘটনাটি ঘটে অন্ধ্রপ্রদেশের আক্কায়াপালেম অঞ্চলে। এদিন পুলিশের কাছে একটি ফোন এসেছিল। ওই কলেই পুলিশ জানতে পারে, ওই অঞ্চলে কোনো এক ব্যক্তি রাস্তায় গুজব ছড়াচ্ছেন। তৎক্ষণাৎ চতুর্থ টাউন পুলিশের কয়েকজন কনস্টেবল ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ওই অঞ্চলে গিয়েই পুলিশ জানতে পারেন তাঁর পরিচয়। তারপর পিছমোড়া হাত বাঁধা হয় ওই ডাক্তারের। মাটিতে ফেলে চলে এলোপাথাড়ি লাথি। তাঁকে কটুক্তিও করে এক পুলিশ কনস্টেবল। কিছুক্ষণ পরে অটোরিক্সায় এভাবেই বেঁধে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এই ঘটনার ভিডিও দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় স্যোশাল মিডিয়ায়। ছড়িয়ে পরে চাঞ্চল্যও।

বিশাখাপত্তনমের পুলিশ কমিশনার আর.কে. মীনা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ ছড়াচ্ছিলেন। তাছাড়াও এক পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন উনি, ফোন ছুঁড়ে ফেলে দেন রাস্তায়। তাছাড়াও ওই চিকিৎসক মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলেই দাবি করেছেন আর. কে. মীনা।

ডঃ সুধাকর এখন কিং জর্জ হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন। চলছে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা। সুস্থ হয়ে উঠলে আইপিসি’র ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই জানিয়েছে বিশাখাপত্তনম পুলিশ কমিশনার। তবে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্যি হলেও তাঁর প্রতি এই নৃশংস ব্যবহার কতটা যুক্তিযুক্ত, সে ব্যাপারে প্রশ্নও থেকেই যায়। আর এই প্রসঙ্গেই চরমের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে অন্ধ্র প্রশাসন…