'ইয়ং ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার' হিসেবে বিশ্বজয় ১০ বছরের ভারতীয়ের

বয়স মাত্র ১০ বছর। এর মধ্যেই বিশ্বজয় করে ফেলেছে বেঙ্গালুরুর বালক বিদ্যুন আর হেব্বার। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ২০২১ সালের ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার পুরস্কার। আর সেখানেই স্বল্পবয়সী প্রতিযোগীদের মধ্যে সেরার শিরোপা পেল হেব্বার। ৯৬টি দেশ থেকে অন্তত ৫০ হাজার প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল প্রতিযোগিতায়। তার মধ্যে থেকে হেব্বারের তোলা একটি মাকড়সার ছবিকেই বেছে নিয়েছেন লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের বিচারকরা।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি সদ্য নির্মিত জালের মধ্যে আরাম করে বসে আছে একটি মাকড়সা। আপাতভাবে খুবই সাধারণ একটি দৃশ্য। কিন্তু হেব্বারের ক্যামেরার চোখে সেটাই অসাধারণ হয়ে ধরা পড়েছে। বিচারকদের প্রধান রোজ কিডম্যান কক্সও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এমন ছবি দেখে। তাঁর কথায়, মাত্র পঞ্চম শ্রেণির একজন পড়ুয়ার ছবি সম্পর্কে এমন নিখুঁত ধারণা এবং কল্পনার এই বিস্তার সত্যিই অবাক করে। ছবিটির ফ্রেম থেকে শুরু করে ফোকাস, সবটাই নিখুঁত। তবে সবচেয়ে বেশি করে যে বিষয়টিতে অবাক হয়েছেন কক্স, তা হল রং সম্বন্ধে হেব্বারের ধারনা। ছবিটির পুরো প্রেক্ষাপটে একটি যান্ত্রিক অটোরিক্সার রঙিন ব্যাকগ্রাউন্ড আলাদা মাত্রা যোগ করে দিয়ে গিয়েছে।


গতবছরই প্রথম ভারতীয় হিসাবে ‘ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ার’ সম্মান পেয়েছিলেন ঐশ্বর্য শ্রীধর। আর এবছর ‘ইয়ং ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ার’ সম্মান পেল বিদ্যুন হেব্বার। মাত্র ৩ বছর বয়সে ক্যামেরায় হাতে-খড়ি হেব্বারের। তারপর বাড়ির এবং এলাকার আশেপাশের ছোটো ছোটো প্রাণীদের ছবি তোলাই তার নেশা। মানুষ যাদের সবসময় দেখলেও আলাদা করে দৃষ্টি দেয় না কখনও। কখনও প্রজাপতি বা কখনও পিঁপড়ের সারি হয়ে উঠেছে হেব্বারের ছবির বিষয়বস্তু। ৮ বছর বয়স থেকেই সেইসব ছবি লন্ডন ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের প্রতিযোগিতায় পাঠাতে শুরু করেছে সে। অবশেষে মিলল স্বীকৃতিও। হেব্বারের এই সাফল্যে খুশি তার বাবা-মাও। বাবা পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির যে বিচ্ছেদ ঘটে যাচ্ছে, ছেলেকে সেটা থেকেই মুক্ত করতে চেষ্টা করেছেন তিনি। অনেক বাবা-মা সন্তানদের বলেন কাদায় খেলা না করতে বা পোকামাকড়দের স্পর্শ না করতে। কিন্তু সব পোকামাকড় তো বিষাক্ত নয়। তাদের চেনাটাও প্রয়োজন। হেব্বারের এই সাফল্য যদি কয়েকজন বাবা-মাকেও নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে, তাহলেই খুশি হবেন তাঁর বাবা।

Powered by Froala Editor