‘সব বাঙালিই বাংলাদেশি’, বাঙালি-বিদ্বেষের পোস্টার মেঘালয়ে

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজ্য জুড়ে মেঘালয়ে ছড়িয়ে পড়ল কিছু পোস্টার। যার মূল বক্তব্যই হল, ‘ মেঘালয়ের সব বাঙালিই বাংলাদেশি’। এছাড়াও বাঙালি-বিদ্বেষমূলক বিভিন্ন পোস্টারও চোখে পড়ে মেঘালয়ে। খাসি ছাত্র সংগঠনের ছড়ানো এই পোস্টারকে কেন্দ্র করেই নতুন করে মাথা চাড়া দিচ্ছে ঘুমিয়ে থাকা হিংসা। সূত্রপাত হচ্ছে ধামাচাপা পড়া বিতর্কের।  

বছররের শুরু থেকেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল দেশ। দিল্লি, অসম ও অন্যান্য রাজ্যের মতোই সিএএ-এর প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন মেঘালয়বাসীরা।  বাঙালিরাই ছিলেন যার প্রধান অংশ। মেঘালয়ের ইছামতীতে সেই আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। হাতাহাতিতে মৃত্যু হয়েছিল এক খাসি ট্যাক্সি ড্রাইভারের। পরিস্থিতি এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছিল যে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন বেশ কিছু বাংলাভাষী। চলে প্রশাসনিক ধর-পাকড়ও। 

তবে এতদিন পরিস্থিতি থিতিয়ে এসেছে বলে মনে হলেও আদৌ বাস্তব চিত্র যে তেমনটা নয়, তাই যেন জানান দিল সাম্প্রতিক ঘটনা। পোস্টার ছড়িয়ে পড়ার পরই অভিযোগ ওঠে, এখনও অধিকাংশ বাঙালি পুরুষদেরই ফিরতে দেওয়া হয়নি গ্রামে। বন্ধ করা হয়েছে তাঁদের ব্যবসাও। পাশাপাশি অভিযোগ ওঠে, মহিলা এবং শিশুদের ওপরেও চলছে নির্যাতন। যদিও স্থানীয় প্রশাসনের তদন্ত এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছে।

অন্যদিকে জঙ্গি সংগঠন এইচএনএলসিও-র লাগাতার হুমকির সম্মুখীনও হচ্ছেন বাঙালিরা। মেঘালয়ের বিভিন্ন স্থানে বাঙালি-বিদ্বেষী পোস্টার ছড়িয়ে পরার পরই পুলিশ সরিয়ে দেয় সেগুলি। মেঘালয়ের ওই ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধেও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশি বিভাগ। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে রাজ্যের বাইরে বাঙালিদের নিরাপত্তা নিয়ে। চলছে বাংলাদেশি ট্যাগ সেঁটে দিয়েই সাম্প্রদায়িক বিভেদের চেষ্টা। এদিন মেঘালয় সরকারের কাছে আন্দোলনে সরব হয় মেঘালয়ের বাংলা সংগঠনও। তবে পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেননি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বাঙালি ও খাসি দুই সম্প্রদায়ের সঙ্গেই কথা বলে সমঝোতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু মৌখিক স্তরেই কি আটকে থাকবে এই আশ্বাস? তেমনটাই আশঙ্কা করছেন মেঘালয়বাসী বাঙালিরা। দিন কাটাচ্ছেন দুশ্চিন্তার মধ্যেই...

Powered by Froala Editor

More From Author See More

Latest News See More