‘সংকটে ভারতের গণতন্ত্র’, জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক গবেষণাও

ভারতের সংবিধানের পাতায় বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা থাকে ‘Democracy’, অর্থাৎ গণতন্ত্র। কাগজে, টিভিতে শোনা যায়, এই দেশ বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো গণতন্ত্রের অধিকারী। আর সেটাই নাকি আজ বিপন্ন। ভারতের নামের পাশ দিয়ে নাকি উঠেই যেতে পারে ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি! এমনই তথ্য নিয়ে এল সুইডেনের ভি-ডেম ইন্সটিটিউট। 

গোটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিশেষ গবেষণা বিভাগটি গোটা পৃথিবী জুড়েই গণতন্ত্র নিয়ে একটি বিশেষ সমীক্ষা চালিয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে চলছে এই কাজ। পৃথিবী জুড়ে রাষ্ট্র কীভাবে চলছে, দেশের ভেতরে পরিস্থিতি কী, সংবাদমাধ্যম কেমন ভাবে কাজ করছে— এই সমস্ত কিছুই নিজেদের সমীক্ষায় কাজে লাগিয়েছেন ভি-ডেমের গবেষকরা। এবং সেই বিপুল তথ্যের ভেতরেই উঠে এসেছে ভারতের করুণ পরিণতি। বিগত কয়েক বছরে ভারতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা যে খাতে বইছে, সেসব বিবেচনা করেই এমন সাবধানবাণী শুনিয়েছে এই সংস্থাটি। 

ঠিক কী বলেছে এরা? গবেষণা বলছে, এই মুহূর্তে বিশ্বে স্বৈরাচারী প্রশাসনের সংখ্যা বাড়ছে। আর তারাই প্রধানত নিজের ছড়ি ঘোরাচ্ছে। আর এই সূত্রেই উঠে এল জি-২০ দেশগুলোর কথা। ভি-ডেমের গবেষকরা বলছে, এই গোষ্ঠীর বেশিরভাগ দেশেই এই স্বৈরাচারী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেখানে আমেরিকা, ব্রাজিল, তুরস্কের সঙ্গে উঠে এসেছে ভারতের নামও। বিগত কয়েক বছরে সংবাদমাধ্যমের চরিত্র, প্রতিবাদীদের দমন করা, মহিলাদের নিরাপত্তাহীনতা— এই সব ঘটনাই দেখে এসেছে দেশ। আর এসবের মাঝখানে ক্ষতি হচ্ছে অর্থনীতির। ঠিক এই জায়গাটাই তুলে ধরেছে এই গবেষণা। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার খর্ব হচ্ছে, নিজের বক্তব্য জানানোর অধিকারকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। পাঠকদের মনে থাকবে, আরটিআইয়ের ক্ষমতাও লঘু করার প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছিল। আর এই সমস্ত ঘটনার অবশ্যম্ভাবী ফল— গণতন্ত্র উঠে যাওয়া। এখনই ভারতের চূড়ান্ত কোনো অবস্থা আসেনি বলে জানাচ্ছেন এই গবেষকরা। যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে ঠিক কী লেখা আছে, কেউ জানে না…   

Powered by Froala Editor