বাঙালির প্রযুক্তিতে বাজিমাত, কলকাতায় অঞ্চলভেদে দূষণের মাত্রা জানাবে নয়া যন্ত্র

ধীরে ধীরে শীতকাল জমাট বাঁধছে কলকাতা শহরে। আর শীতকাল আসা মানেই সেইসঙ্গে হঠাৎ করেই বেড়ে যাওয়া বায়ুদূষণের মাত্রা। দিল্লির মতো অবস্থা না হলেও দূষণের নিরিখে তিলোত্তমার পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধা জনক নয় একেবারেই। কলকাতায় দূষণ মাপতে তাই এবার বসতে চলেছে নয়া যন্ত্র। নাম ‘ক্লেয়ার’ (Cleair)। কলকাতারই এক স্টার্ট আপ সংস্থা ‘ক্লেয়ার’-র তৈরি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই যন্ত্র সব নাগরিককেই দূষণের মাত্র জানাতে সক্ষম।

দেখতে অনেকটা ব্যাটারি চালিত এমার্জেন্সি ল্যাম্পের মতোই। তবে তার ভেতরেই বসানো রয়েছে অত্যাধুনিক একটি সেন্সার। বায়ুতে উপস্থিত ধূলিকণার পরিমাণ বিশ্লেষণ করেই তা নির্ণয় করবে দূষণের মাত্রা। পিএম১০ থেকে শুরু করে পিএম ২.৫ পর্যন্ত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাও নজর এড়াতে পারবে না এই যন্ত্রের। কলকাতার দূষণ পরিমাপে ধন্দ থেকে যায় প্রায়শই। প্রচলিত পদ্ধতিতে ভুল রিডিং আসে অধিকাংশ সময়েই, এমন অভিযোগ করতেও দেখা গিয়েছিল রাজ্যের পরিবেশকর্মীদের। এবার সেই সমস্যারই রেশ পড়তে চলেছে ‘ক্লিএয়ার’-এর হাত ধরে।

উল্লেখ্য ভারতে এই ধরণের প্রযুক্তির ব্যবহার আগেও হয়ে থাকলে, তা নির্ভুল মান জানাত না কখনোই। প্রথম কোনো বাঙালি তথা ভারতীয় সংস্থার তৈরি এই যন্ত্রই সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাতে চলেছে। তুলে ধরতে চলেছে একটি গোটা শহরের দূষণের মানচিত্র।

কিন্তু কীভাবে কাজ করবে এই যন্ত্র? “এই প্রযুক্তিকে বলে ‘ইন্টারনেট অফ থিঙ্কস’। আইওটি। শহরের যেকোনো প্রান্তের যেকোনো সময়ের দূষণের মাত্রার মাপ নিয়ে পারবে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে সেই তথ্য চলে যাবে সার্ভারে। অন্যদিকে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অ্যাপও তৈরি করা হচ্ছে ক্লিএয়ারের। সেই অ্যাপ ফোনে ইনস্টল করলেই প্রত্যেকেই পেয়ে যাবেন দূষণ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য”, জানালেন আইডিয়েশন টেকনোলজির কর্ণধার সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত বেসরকারি সংস্থা আইডিয়েশন টেকনোলজিরই একটি শাখা 'ক্লেয়ার'।

গোটা কলকাতার দূষণ পরিমাপে আপাতত ২০টির মতো যন্ত্র লাগবে বলেই জানা গেছে। এক একটির জন্য খরচ হবে ২০ হাজার টাকা। যন্ত্রগুলি ল্যাম্পপোস্টের ওপরে লাগানো হবে দূষণ পরিমাপের জন্য। ব্যাটারি অথবা সৌরবিদ্যুৎ, উভয় শক্তিতেই চলতে পারে এই যন্ত্র।

কলকাতায় ইলেকট্রিক চালিত যানবাহন চালানোর পর দূষণের অবস্থা ঠিক কোথায়? অঞ্চল ভিত্তিক এই তথ্য পেতেই বিশ্বব্যাঙ্ক শুরু করেছিল এই প্রোজেক্ট। যন্ত্র প্রস্তুতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কলকাতার এই সংস্থাকে। কলকাতার পর আরও সাতটি ভারতীয় শহরে কার্যকরী হতে চলেছে এই প্রকল্প। কলকাতার পরেই সেই তালিকায় নাম রয়েছে বারানসীর...

আরও পড়ুন
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করবে ছত্রাকের ট্যাবলেট, বাড়াবে মাটির গুণগত মানও

Powered by Froala Editor