গত ৩ দশকে বদলেছে আমেরিকার এক-তৃতীয়াংশ নদীর রং, সাক্ষী নাসার উপগ্রহগুলি

নদী, শব্দটা বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ঘন নীল রং। কিন্তু নীল জলের অস্তিত্ব কি আর সত্যিই কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়? ক্রমাগত পরিবেশ দূষণ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে নদীর রং বদলেছে এবং আজও বদলে চলেছে। সম্প্রতি ঠিক তেমনই একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হল ‘জিওগ্রাফিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’ পত্রিকায়। গত সপ্তাহের সংখ্যায় একটি গবেষণাপত্রে দেখানো হয়েছে কীভাবে গত ৩ দশক ধরে আমেরিকার নদীগুলির রং বদলেছে। আর তাতেই দাবি করা হয়েছে, ১৯৮৪ সাল থেকে এক তৃতীয়াংশ নদীর জলের রংই কোথাও সবুজ তো কোথাও হলুদ বা বেগুনির কাছাকাছি চলে গিয়েছে।

গবেষনাপত্রের লেখক জোন গার্ডনার এই ৩৬ বছরে নাসার বিভিন্ন উপগ্রহ প্রেরিত ছবি নিয়ে দেখিয়েছেন, আমেরিকার সমস্ত জলাশয়ের রংই বদলাচ্ছে। আর এই পরিবর্তন ঘটে চলেছে মাইলের পর মাইল বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে। দেখা গিয়েছে, মাত্র ৫ শতাংশ নদীর জলের রঙে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। বাকি নদীর জল বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সবুজ হয়ে যাচ্ছে। আর এই সবুজ রঙই সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার কারণ। গার্ডনারের কথায়, জলের রং সবুজ হয়ে যাওয়ার অর্থ তাতে শৈবাল ও অন্যান্য পরজীবির সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। এর ফলে অক্সিজেনের ঘাটতি ঘটবেই। আর তাতে ব্যাহত হবে জলাভূমির স্বাভাবিক বাস্তুতন্ত্র।

এছাড়াও দেখা গিয়েছে, আমেরিকার পশ্চিম অঞ্চলে নদীর জল অনেকটা হলুদের কাছাকাছি। এর কারণ হিসাবে তিনি দাবি করেছেন, সেখানে জলে প্রচুর পরিমাণে মাটি মিশেছে। বিগত ৩ দশক ধরে এই অঞ্চলে কী পরিমাণ মৃত্তিকাক্ষয় ঘটেছে তার সবথেকে বড়ো প্রমাণ এই বর্ণপরিবর্তন। আর বেগুনি রঙের কারণ অবশ্যই কলকারখানা এবং কৃষিজমির দূষণ। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। অবশ্য সেটা নতুন কথা নয়। একের পর এক সমীক্ষায় এই কথা শুনতে শুনতে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু গার্ডনার যেভাবে সহজ ভঙ্গিতে পুরো বিষয়টা তুলে ধরেছেন, তা সত্যিই ব্যতিক্রমী।

Powered by Froala Editor