কোভিডে আক্রান্ত হাথরাস-কাণ্ডে বন্দি সাংবাদিক, লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হোক কিংবা কানাডা— মহামারীর পরিস্থিতিতে মাস কয়েক আগে মুক্তি দেওয়া কারাবন্দিদের। মানবাধিকারের স্বার্থেই। অন্যদিকে একেবারে এর ঠিক উল্টো ছবি ভারতে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা কারাবন্দিকে পুনরায় জেলে ফেরানোর জন্য শীর্ষ বিচারপতির কাছে আবেদন করলেন খোদ কারাবন্দির স্ত্রী। না, এই কারাবন্দি কোনো দাগী অপরাধী নন, তিনি উত্তরপ্রদেশে ধৃত কেরালার সাংবাদিক সিদ্দিকি কাপ্পান।

বেশ কিছুদিন আগে কারারুদ্ধ অবস্থাতেই দুর্ঘটনার শিকার হন কাপ্পান। শৌচাগারে পরে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন তিনি। তার ওপর কোভিডের সংক্রমণ। ফলত তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মথুরা মেডিক্যাল কলেজে। তবে সেখানে পরিচর্যার বদলে রীতিমতো অত্যাচার চলছে তাঁর ওপরে। হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছে বিছানার সঙ্গে। এমনকি ঠিক মতো খেতেও দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে। এমনটাই অভিযোগ তাঁর স্ত্রী রিহান্থ কাপ্পানের। কাপ্পানের শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তাঁর। সেই মর্মেই সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনভি রমনের কাছে লিখিত আবেদন করেন কাপ্পানের আইনজীবী। 

গত অক্টোবর মাসের ঘটনা। কেরালার সাংবাদিক কাপ্পান উত্তরপ্রদেশে ছুটে গিয়েছিলেন হাথরস কাণ্ডের কভারেজ করতে। তবে নির্যাতিতার বাড়ির পর্যন্ত আর পৌঁছতে পারেননি তিনি। তার আগেই কাপ্পান এবং তাঁর তিন সহকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। লাগু করা হয় ইউএপিএ অ্যাক্ট এবং দেশদ্রোহিতার মামলা। পরে তাঁদের বদলি করে দেওয়া হয়েছিল মথুরা জেলে।

চার সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা নিয়েই সে-সময় উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। প্রশ্ন উঠেছিল যোগী সরকারের কার্যকলাপ নিয়ে। চর্চা হয়েছিল সাংবাদিকদের বাকস্বাধীনতা প্রসঙ্গে। এবার আরও একবার অস্বস্তির মুখে পড়ল উত্তরপ্রদেশ সরকার। কারাবন্দিদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ যোগী প্রশাসন, প্রমাণিত হল তা। 

আরও পড়ুন
বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা নিলেন ২৩৬ জন বাল্মীকি সম্প্রদায়ের মানুষ; হাথরাস-কাণ্ডের প্রতিফলন?

উল্লেখ্য, এর আগেও একাধিকবার জামিনের আবেদন করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন প্রতিবারই। আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল কাপ্পানের সংবাদ সংস্থা ‘কেআইওজে’-ও। তবে সেই শুনানির দিন গত মাসে বাতিল হয়ে গিয়েছিল কোভিড পরিস্থিতির কারণে। স্ত্রীয়ের পাশাপাশি আদালতে সম্প্রতি আবেদন জানিয়েছে তাঁর কর্মসংস্থানও। তাঁকে যেন দিল্লিতে এইমস-এ স্থানান্তরিত করা হয় কোভিড সংক্রান্ত চিকিৎসার জন্য, সেই আর্জিই জানাচ্ছেন তাঁরা। তবে এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি…

আরও পড়ুন
সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার উত্তরপ্রদেশে, ‘রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আড়ালে কি কণ্ঠরোধের চেষ্টা?

Powered by Froala Editor