জনহিতকারী পুঁজিপতিদের শীর্ষে আজও জামশেদজি টাটা

পুঁজিপতিদের সঙ্গে বৃহত্তর সমাজের একটা বড়ো অর্থনৈতিক বিরোধ আছে। এটা শুনেই আমরা অভ্যস্ত। তবে কেউ কেউ নিজেদের নিরাপদ গণ্ডিটা ভেঙে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সমাজের সার্বিক উন্নয়নের জন্যও। তবে এমন উদাহরণ খুব বেশি নেই। সেই ব্যতিক্রমী পুঁজিপতিদের কথা বললে প্রথমেই মনে আসবে জামশেদজি টাটার কথা। ভারতের বিজ্ঞান গবেষণা থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে তাঁর বিপুল অর্থলগ্নির কথা সকলেরই জানা। আর সম্প্রতি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, গত ১০০ বছরে গোটা পৃথিবীর সমস্ত পুঁজিপতিদের মধ্যে জামশেদজি টাটাই জনহিতকারী প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি অর্থলগ্নি করেছেন।

আন্তর্জাতিক সংস্থা ইডেল-গিভ ফাউন্ডেশন এবং হুরুন ইন্ডিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই তালিকায় উঠে এসেছে ৫০ জন পুঁজিপতির নাম। তার মধ্যে জামশেদজি টাটা হলেন ‘বেস্ট ফিলানথ্রপিস্ট’ বা শ্রেষ্ঠ জনহিতকারী। পরিসংখ্যান বলছে, বিভিন্ন জনহিতকর প্রকল্পে তাঁর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ১০২.৪ বিলিয়ন ডলার। যা দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিল গেটসের চেয়ে প্রায় দেড়গুণ। তবে সার্বিক সংখ্যার ভিত্তিতে এই তালিকাতেও এগিয়ে এসেছেন আমেরিকার পুঁজিপতিরাই। প্রথম ৫০ জনের মধ্যে ৩৯ জনই আমেরিকার। এরপর আছেন ইংল্যান্ড থেকে ৫ জন। এছারা চিনের ৩ জন পুঁজিপতি ও ভারতের দুজন  পতির নাম স্থান পেয়েছে তালিকায়। জামশেদজি টাটা ছাড়া ভারত থেকে রয়েছেন আজিম প্রেমজি। উইপ্রো কর্ণধার আজিম প্রেমজির এখনও অবধি মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ২২ বিলিয়ন ডলার। তিনি রয়েছেন তালিকার ১২ নম্বর স্থানে।

সদ্য প্রকাশিত এই তালিকা তৈরির অভিজ্ঞতা থেকে হুরুন ইন্ডিয়ার মুখ্য সমীক্ষক রুপার্ট হুগওয়ার্ফের বক্তব্য, সময় যত এগোচ্ছে ততই জনহিতকর প্রকল্প থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন  পতিরা। তালিকার বেশিরভাগ পুঁজিপতিরই ব্যবসার মূল সময়টা ছিল আজ থেকে অন্তত ৫ দশক আগের। অথচ বর্তমানে মার্ক জুকারবার্গ, এলন মাস্ক বা আমাজন কর্ণধার জেফ বেজোসের নাম আসেনি তালিকায়। যদিও বেজোসের স্ত্রী ম্যাকেনজি স্কট রয়েছেন তালিকার ২৯ তম স্থানে। বর্তমান সময়ের পুঁজিপতিরাও যাতে আরও বেশি করে এইধরনের কাজে এগিয়ে আসে, সেই উদ্দেশ্যে তাঁদের অনুপ্রেরণা দিতেই এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আর সেই তালিকার শীর্ষে একজন ভারতীয়ের নাম। তৃতীয় বিশ্বের দেশ হয়েও এক বিরল গর্বের অধিকারী ভারত।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ধ্বংসের মুখে টাটা সাম্রাজ্য, উদ্ধারকর্তা একটি ‘সামান্য’ হিরে!