অনলাইন ক্লাসের জন্য ৮০০ পড়ুয়াকে স্মার্টফোন দেবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

করোনা পরিস্থিতিতে পঠনপাঠন চালিয়ে যেতে অনেক প্রতিষ্ঠানই বেছে নিয়েছে অনলাইন ক্লাসের প্রযুক্তি। পড়ুয়ারা এক্ষেত্রে স্কুল-কলেজের ক্যাম্পাসে না গিয়েই বাড়িতে বসে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু তার অন্য প্রয়োজন অন্তত একটি স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশন। কিন্তু সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া স্লোগানের পরেও প্রশ্ন থেকেই যায়, এই সামান্য পরিকাঠামো দেশের কতজন পড়ুয়ার কাছে আছে? নাকি নিছক অর্থনৈতক কারণেই পরাশোনা থেকে ইস্তফা দিতে হবে অসংখ্য ছাত্রছাত্রীকে? তবে নিজের প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের কাউকেই যাতে সমস্যায় পড়তে না হয়, তার জন্য এগিয়ে এল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। আর সেই সমীক্ষার রিপোর্ট দেখে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৮০০ জন পড়ুয়াকে স্মার্টফোন এবং ডেটা-প্যাক প্রদান করবে বিশ্ববিদ্যালয়।

উপাচার্য সুরঞ্জন দাস জানিয়েছেন সমীক্ষায় পড়ুয়াদের দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১) যাদের কাছে স্মার্টফোন নেই। ২) যাদের স্মার্টফোন আছে, কিন্তু ইন্টারনেট প্যাক রিচার্জ করার মতো সামর্থ্য নেই। সেই অনুযায়ী তাদের কাছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো পৌঁছে দেওয়া হবে। আর এই খরচ বহন করবে বিশ্ববিদ্যালয়। প্রত্যেক শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে আবেদন জানানো হয়েছে, এই অর্থ সংগ্রহের জন্য তাঁরা যেন একদিনের বেতন ফান্ডে প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা তাঁদের একদিনের বেতন প্রদান করলে অনেকটাই অর্থ সংগ্রহ করা যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে এরপরেও বণিকসভার কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদন করা হবে বলেও জানিয়েছেন উপাচার্য।

করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছেন অনেকেই। তার উপরে এসেছিল আমফান। এখনও সুন্দরবনের অনেক মানুষের মাথার উপর ছাদ নেই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরও অনেক পড়ুয়াই আসে সুন্দরবন থেকে। তাদের এই অবস্থায় স্মার্টফোন কিনতে বলার চেয়ে অমানবিক আর কিছুই হতে পারে না, মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক, পার্থপ্রতিম রায়। তাঁর অনুরোধেই উপাচার্য এই কাজের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে যাদবপুরে শুরু হতে চলেছে আগামী সেমিস্টারের পঠনপাঠন। এই প্রক্রিয়া চলবে অনলাইনেই। মূলত হোয়াটসঅ্যাপ এবং ই-মেইলের মাধ্যমে সমস্ত লেকচার, টেক্সটবুক এবং স্টাডি মেটিরিয়াল পাঠানো হবে পড়ুয়াদের কাছে। তার আগেই সমস্ত পড়ুয়ার কাছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো পৌঁছে দেওয়া যাবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
যাদবপুরে তৈরি মাস্কের পেটেন্ট নিয়ে গেল আমেরিকা, ক্ষুব্ধ উপাচার্য