সকালেই আছড়ে পড়ল আরও এক দুঃসংবাদ। প্রয়াত কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী অমলাশঙ্কর। শুক্রবার রাতেই ঘুমের মধ্যে মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স হয়েছিল ১০১ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণেই চলে গেলেন এই শিল্পী।
আজ সকালেই অমলাশঙ্করের নাতনি শ্রীনন্দা শঙ্কর সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ঠাকুমার প্রয়াণ সংবাদ জানান। তিনি লেখেন – ‘আজ, ১০১ বছর বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ঠাকুমা। গত মাসেই ওঁর জন্মদিন পালন করেছিলাম আমরা। মুম্বাই থেকে কলকাতা যাওয়ার বিমান চালু না-থাকায় খুব অস্থিরতার মধ্যে আছি। ওঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। একটি যুগের অবসান হল।’
আক্ষরিক অর্থেই বাঙালি কিংবদন্তিদের শেষতম জীবিত প্রতিনিধিদের একজন ছিলেন অমলাশঙ্কর। জন্ম ১৯১৯ সালের ১৭ জুন, যশোরে। মাত্র ১১ বছর বয়সেই অংশ নেন প্যারিসের ইন্টারন্যাশানাল কলোনিয়াল একজিবিশনে। সেখানেই আলাপ নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্করের সঙ্গে। দুজনে একসঙ্গে একাধিক অনুষ্ঠানও করেন। পরবর্তীকালে, মাত্র ১৯ বছর বয়সে উদয়শঙ্করের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অমলা। তাঁরা দুজন হয়ে ওঠেন বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী জুটি। এই দুই কিংবদন্তির হাতেই গড়ে ওঠে বৃত্যজগতের বিখ্যাত শঙ্কর ঘরানা। ২০১২ সালে শেষ মঞ্চ পরিবেশন পর্যন্ত তিনি এই ঘরানাকে ধরে রেখেছিলেন। এখন সেই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন মমতা শঙ্কর এবং তনুশ্রী শঙ্কর।
উদয়শঙ্করের পরিচালনায় ১৯৪৮ সালে ‘কল্পনা সিনেমায় অমলার অভিনয় প্রশংসিত হয় সর্বত্র। বহু পরে সেই ২০১২ সালে সেই সিনেমা দেখানো হয় কান চলচ্চিত্র উৎসবেও। আক্ষরিক অর্থেই সারাটা জীবন নৃত্যময় হয়েই কেটেছে তাঁর। আর আজীবনের সাধনার স্বীকৃতিও পেয়েছেন দেশ বিদেশ থেকে। ‘সোভিয়েত ল্যান্ড নেহেরু পুরস্কার’ এবং ‘পশিমবঙ্গ নাট্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারে’র পাশাপাশি ১৯৯১ সালে তাঁর নাম ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কারের জন্যও নথিভুক্ত হয়। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের থেকে পান ‘বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার’।শতায়ু বাঙালিদের অন্যতম ছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ মেয়ে মমতা শঙ্কর, পুত্রবধূ তনুশ্রী শঙ্কর সহ অসংখ্য অনুরাগী। এক-একটি জীবনের সমাপ্তি বোধহয় এমনই সার্বিক শূন্যতা নিয়ে আসে...
আরও পড়ুন
বিশ্বে মাইক্রোবায়োলজির প্রথম পেটেন্ট তাঁর নামে, নীরবেই চলে গেলেন বাঙালি গবেষক আনন্দমোহন
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
চলে গেলেন বলিউডের 'মাস্টারজি', সরোজ খানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া