ধ্বংস হচ্ছে পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র, সংকটে মানব সভ্যতা; চিন্তায় বিজ্ঞানীরা

একদিকে করোনা, অন্যদিকে একের পর এক ঘটে চলা প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ভারত তো বটেই, গোটা পৃথিবীর অবস্থা সঙ্গিন। তারই মধ্যে আরও একটি দুশ্চিন্তার কথা শোনালেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের একটা অংশ ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। আর সেটাই চিন্তায় ফেলেছে বিজ্ঞানীদের। মানব সভ্যতা তো বটেই, সামগ্রিক পৃথিবীরও বিপদ হতে পারে এর ফলে, এমনটাই জানাচ্ছেন তাঁরা। 

ছোটবেলায় ভূগোল এবং বিজ্ঞানের বইতে আমরা এই চৌম্বক ক্ষেত্রের কথা ভালোমতোই পড়েছি। পৃথিবীর দুই মেরুর কথা এবং কম্পাসের কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কেও জানি। এবার পৃথিবীর সেই নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র সংকটে। ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সির বিজ্ঞানীরা বলছেন, এমনিতেই এই ক্ষয়টা স্বাভাবিক। তথ্য অনুযায়ী, বিগত ১০০ বছরে নয় শতাংশের কাছাকাছি হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু বছরে এই ক্ষয়ের হারটাই অনেক বেড়ে গেছে। এটাই চিন্তার বিষয়। 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার মাঝের জায়গায় চৌম্বক ক্ষেত্রের এই ক্ষয় দেখা যাচ্ছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘সাউথ আটলান্টিক অ্যানোমালি’। এবং সময় যত যাচ্ছে, এটা আরও বাড়ছে। ঠিক কেন এটা হচ্ছে, তার নির্দিষ্ট কারণ এখনও বের করতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা। মনে করা হচ্ছে, পৃথিবীর দুই মেরুর স্থান পরিবর্তনের জন্যই এই বিপদ। 

আর এতেই প্রমাদ গুনছেন সবাই। ঠিক কী কী বিপদ হতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন প্রাথমিক আঘাত নেমে আসবে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর। টেলিফোন, ইন্টারনেট, স্যাটেলাইট সিস্টেম সব বন্ধ হয়ে যাবে। ফোনের কাজ করা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে এটা আসল বিপদ নয়। এই চৌম্বক ক্ষেত্রের জন্যই সূর্য ও মহাকাশের ক্ষতিকারক কসমিক রে এবং সোলার ফ্লেয়ারের হাত থেকে রক্ষা পায় পৃথিবী। এক কথায়, পৃথিবীর ওপর একরকম শিল্ড তৈরি করে রাখে এটি। চৌম্বক ক্ষেত্র এই হারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকলে সেই সিস্টেমেই জোর আঘাত আসবে। ফলে সেই ক্ষতিকারক রশ্মিগুলো পৃথিবীর ভেতর আরও বেশি পরিমাণে ঢুকবে। একবার সেটা শুরু হলে মানব সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে। সব কিছু পুড়িয়ে দেবে। পৃথিবীর মাটিতে জীবন বলে খুব বেশি কিছু থাকবে না… 

তবে এখনই হয়ত এরকম কিছু হবে না। কিন্তু এরকম চলতে থাকলে কয়েকশো বছরের মধ্যেই এমন দিন দেখতে চলেছি আমরা। এর সমাধান কী, এখনও কেউ জানে না। কাজেই, উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা…

Powered by Froala Editor