ক্যানসারের আক্রমণের শিকার ছিল ডাইনোসরও! সাম্প্রতিক আবিষ্কারে চাঞ্চল্য

জুরাসিক যুগের অতিকায় সরীসৃপ ডাইনোসরকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। রীতিমতো রূপকথার প্রাণীদের মতোই মনে করা হয় এই প্রাণীটিকে। এমনকি তার নিলুপ্তিও এক গভীর রহস্যের চাদরে ঢাকা। কিন্তু এর মধ্যে হঠাৎ যদি বলা হয়, ডাইনোসরের শরীরেও বাসা বেঁধেছিল ক্যানসার! অবাক হবেন নিশ্চই। কিন্তু প্রত্নতাত্ত্বিকদের সাম্প্রতিক আবিষ্কার এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে আনছে।

প্রায় ৭৫ মিলিয়ন বছরের পুরোন একটি ডাইনোসরের জীবাশ্ম প্রমাণ করেছে, বর্তমানে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়া ভয়ঙ্কর মারন রোগ ক্যানসারের হাত থেকে নিষ্কৃতি পায়নি ডাইনোসরও। ৭৫ মিলিয়ন বছর পর সেই রোগ সম্বন্ধে অবশেষে জানতে পারলেন আজকের চিকিৎসকরা।

প্রাপ্ত নমুনাটি দেখে প্রথমেই প্রত্নতাত্ত্বিকদের সন্দেহ হয়েছিল, এই প্রাণীটির পায়ের একটি হাড় ঠিক স্বাভাবিক নয়। তখন কানাডার প্রত্নজীববিশেষজ্ঞরা চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হলেন। আর সিটি স্ক্যান পদ্ধতিতে বোঝা গেল সত্যিই অস্বাভাবিক রকম বৃদ্ধি ঘটেছে হাড়ের। বায়োপসির মাধ্যমে চিকিৎসকরা সেটাকে টিউমার বলে চিনতে পারলেন। এবং এই টিউমার যে ক্যানসারের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, সে বিষয়েও নিঃসন্দেহ তাঁরা।

তবে প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, ক্যানসারে মৃত্যু হয়নি এই ডাইনোসরের। কারণ তার সঙ্গে একই প্রজাতির আরও অনেক তৃণভোজী ডাইনোসরের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে। অতএব ধারণা করা যায় কোনো মাংসাশী ডাইনোসরের আক্রমণেই মৃত্যু ঘটেছে সকলের। এখানে রয়্যাল অন্টারিও মিউজিয়ামের গবেষক ডেভিড ইভানসের বক্তব্য, এই জীবাশ্ম আর একবার প্রমাণ করল আদিম যুগের প্রাণীরাও কতটা গোষ্ঠীবদ্ধ ছিল। যে স্তরের ক্যানসার এই ডাইনোসরের শরীরে পাওয়া গিয়েছে তাতে নিঃসন্দেহে বলা যায়, প্রচণ্ড শারীরিক কষ্টের মধ্যে কেটেছে তার শেষ কয়েকটা দিন। কিন্তু দলের বাকি সদস্যরা তাকে ফেলে পালায়নি। মানুষেরও কি কিছু শেখার নেই এই ঘটনা থেকে?

Powered by Froala Editor